Investing Insights: স্টক মার্কেট নবাগতদের জন্য সাপ্তাহিক প্রশ্নোত্তর – পর্ব- ৪

0

প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমাদের টিম MoneyWiseMind.com একটি নতুন বিভাগ চালু করেছে“Investing Insights: Weekly Q&A for Stock Market Newbies”যার উদ্দেশ্য হল নতুনদের মাঝে শেয়ার বাজারের প্রাথমিক জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়া।



এটি আপনার নির্ভরযোগ্য রিসোর্স, যা শেয়ার বাজারকে একদম গোড়া থেকে সহজভাবে বোঝাতে সহায়তা করবে। প্রতিদিন আমরা ১০টি গুরুত্বসহকারে বাছাই করা প্রশ্ন তার উত্তর উপস্থাপন করব, যেখানে শেয়ার বাজারের গুরুত্বপূর্ণ ধারণা, কৌশল পরিভাষা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আপনি যদি সদ্য বাজারে প্রবেশ করে থাকেন, অথবা শেয়ার বাজারে যাত্রা শুরু করতে চান, কিংবা আপনার মৌলিক জ্ঞানকে আরও শক্তিশালী করতে চানআমাদের এই সাপ্তাহিক পোস্ট আপনার জন্য একটি গাইডের মতো কাজ করবে। এটি আপনাকে বিনিয়োগের জগৎকে সহজ বোধগম্য করে তুলতে সহায়তা করবে। শুভ কামনা রইল। 

 

 

দিবস : শেয়ার বাজারের প্রাথমিক ধারণা


. ৫২-সপ্তাহের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন (52-Week High & 52-Week Low) কী?


৫২-সপ্তাহের সর্বোচ্চ (52-Week High) হলো গত ৫২ সপ্তাহে (এক পূর্ণ ক্যালেন্ডার বছর) কোনো শেয়ার যে সর্বোচ্চ দামে লেনদেন হয়েছে। সাধারণত এটি বুলিশ সিগন্যাল হিসেবে ধরা হয়। বিনিয়োগকারীরা মনে করেন, কোনো শেয়ার যদি ৫২-সপ্তাহের সর্বোচ্চ দামে বা তার ওপরে লেনদেন হয়, তবে ভবিষ্যতে তার দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।


৫২-সপ্তাহের সর্বনিম্ন (52-Week Low) হলো গত ৫২ সপ্তাহে কোনো শেয়ার যে সর্বনিম্ন দামে লেনদেন হয়েছে। এটি বিয়ারিশ সিগন্যাল হিসেবে ধরা হয়। যদি কোনো শেয়ার ৫২-সপ্তাহের সর্বনিম্ন দামে পৌঁছায় বা তার নিচে নামে, তবে বিনিয়োগকারীরা ধরে নেন ভবিষ্যতে আরও পতন হতে পারে।


এটি সাধারণত একটি শেয়ারের গত এক বছরের সর্বোচ্চ সর্বনিম্ন দাম। বাজার বিশ্লেষণে এটি বুলিশ বা বিয়ারিশ সিগন্যাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

 

. অল-টাইম হাই এবং অল-টাইম লো (𝗔𝗹𝗹-𝗧𝗶𝗺𝗲 𝗛𝗶𝗴𝗵 & 𝗔𝗹𝗹-𝗧𝗶𝗺𝗲 𝗟𝗼𝘄) কী? 


অল-টাইম হাই (All-Time High) হলো কোনো শেয়ার তার লিস্টিং হওয়ার পর থেকে যে সর্বোচ্চ দামে লেনদেন হয়েছে।


অল-টাইম লো (All-Time Low) হলো লিস্টিং হওয়ার পর থেকে যে সর্বনিম্ন দামে শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে।


শেয়ার লিস্টিং হওয়ার পর থেকে এর সর্বোচ্চ সর্বনিম্ন দামকে বোঝায়।

 

. আপার সার্কিট লোয়ার সার্কিট (Upper Circuit & Lower Circuit) কী?


কোনো ট্রেডিং দিনে কোনো শেয়ারের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন দাম সীমা নির্ধারণ করার প্রক্রিয়াকে আপার সার্কিট লোয়ার সার্কিট বলে।


আপার সার্কিট: দিনে শেয়ারটির সর্বোচ্চ যেই দামে লেনদেন হতে পারবে।


লোয়ার সার্কিট: দিনে শেয়ারটির সর্বনিম্ন যেই দামে নামতে পারবে।
স্টক এক্সচেঞ্জ অতিরিক্ত ভোলাটিলিটি এবং বাজার কারসাজি ঠেকাতে সাধারণত %, ১০% বা ২০% পর্যন্ত সার্কিট সীমা নির্ধারণ করে।


এক দিনে শেয়ার সর্বোচ্চ কতদূর বাড়তে বা নামতে পারবে, তার সীমা এক্সচেঞ্জ নির্ধারণ করে।

 

. গ্রোথ স্টক (Growth Stock) কী?


গ্রোথ স্টক হলো এমন কোনো কোম্পানির শেয়ার যার বৃদ্ধির হার বাজারের গড়ের চেয়ে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ধরনের কোম্পানি সাধারণত ডিভিডেন্ড দেয় না, বরং আয় পুনরায় ব্যবসায় বিনিয়োগ করে। বিনিয়োগকারীরা মূলত ভবিষ্যতে মূলধন বৃদ্ধি (capital gains)-এর আশায় এসব শেয়ার কেনেন।


এমন কোম্পানির শেয়ার যা গড়ের চেয়ে দ্রুত বাড়ছে এবং ভবিষ্যতে ভালো রিটার্ন দিতে পারে।

 

. ভ্যালু স্টক (Value Stock) কী?


ভ্যালু স্টক হলো এমন শেয়ার যা তার মৌলিক মানের তুলনায় কম দামে লেনদেন হয়।
বিনিয়োগকারীরা বিশ্বাস করেন, এক সময় বাজার কোম্পানির প্রকৃত মূল্যকে স্বীকার করবে এবং শেয়ারের দাম বাড়বে। তাই বর্তমানের কম দাম তাদের জন্য বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করে।


এক কথায়, যেসব শেয়ার তাদের আসল মূল্যের তুলনায় কম দামে লেনদেন হচ্ছে, সেগুলো ভ্যালু স্টক।

 

. ডিভিডেন্ড ইল্ড (Dividend Yield) কী?


ডিভিডেন্ড ইল্ড হলো এমন একটি আর্থিক অনুপাত যা দেখায় কোনো কোম্পানি তার বর্তমান শেয়ার মূল্যের কত শতাংশ ডিভিডেন্ড হিসেবে শেয়ারহোল্ডারদের দেয়।


সূত্র: (বার্ষিক প্রতি শেয়ারের ডিভিডেন্ড ÷ বর্তমান শেয়ারের দাম) × 100%


উদাহরণ: কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম ₹20 এবং বার্ষিক ডিভিডেন্ড ₹1 হলে, ডিভিডেন্ড ইয়িল্ড হবে %

 

. ডলার-কস্ট অ্যাভারেজিং (Dollar-Cost Averaging) কী?


ডলার-কস্ট অ্যাভারেজিং হলো একটি বিনিয়োগ কৌশল যেখানে শেয়ারের দাম যাই থাকুক না কেন, নির্দিষ্ট সময় অন্তর নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করা হয়।
এটি দীর্ঘমেয়াদে বাজারের ওঠানামার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য গড় ক্রয়মূল্যকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে।


বাজার যেমনই হোক, নিয়মিত নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করে গড় দামে ভারসাম্য রাখা।

 

. পেনি স্টক (Penny Stock) কী?


পেনি স্টক হলো ক্ষুদ্র কোম্পানির খুব কম দামের (ভারতে সাধারণত ₹10-এর নিচে) শেয়ার। এগুলোর বাজার মূলধন খুবই কম, ঝুঁকি অনেক বেশি এবং প্রায়ই প্রাইস ম্যানিপুলেশনের শিকার হয়।

অনেক সময় এগুলো OTC (Over the Counter) বাজারে লেনদেন হয় কারণ এরা তালিকাভুক্তির ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে পারে না।খুব সস্তা এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয় এই ধরনের শেয়ার গুলো। 

 

. ডেড ক্যাট বাউন্স (Dead Cat Bounce) কী?


ডেড ক্যাট বাউন্স হলো বড় পতনের পর শেয়ারের দামে সাময়িক উত্থান, যা পরে আবার পতনের ধারাবাহিকতায় ফিরে যায়। এটি সাধারণত বিয়ার মার্কেটে দেখা যায় এবং স্বল্পস্থায়ী হিসেবে বিবেচিত হয়।

এই শব্দগুচ্ছ এসেছে প্রবাদ থেকে — একটা মৃত বিড়ালও যদি অনেক উঁচু থেকে পড়ে, তবুও একবার লাফ দেবে।


বড় পতনের পর শেয়ারের সাময়িক উত্থান, যা টেকসই নয়।

 

১০.  অ্যাকটিভ ইনভেস্টিং বনাম প্যাসিভ ইনভেস্টিং (Active vs Passive Investing)


অ্যাকটিভ ইনভেস্টিং: এখানে বিনিয়োগকারী সক্রিয়ভাবে শেয়ার বাছাই করে বাজারকে হারানোর চেষ্টা করেন। এজন্য বাজার জ্ঞান, বিশ্লেষণ নিয়মিত মনিটরিং দরকার।


প্যাসিভ ইনভেস্টিং: এখানে বিনিয়োগকারী সাধারণত ইনডেক্স ফান্ড বা বৈচিত্র্যময় পোর্টফোলিও কেনেন, যাতে বাজার সূচকের পারফরম্যান্স মেলে। এতে খরচ ঝুঁকি কম এবং মনিটরিং কম প্রয়োজন।


অ্যাকটিভ ইনভেস্টিং- বাজারকে হারানোর চেষ্টা করা হয়, আর প্যাসিভ ইনভেস্টিং- বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে চলা হয়।


যদি আপনার মনে শেয়ার বাজারের মৌলিক বিষয়গুলি নিয়ে অন্য কোনো প্রশ্ন থাকে বাকোনো ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয়অনুগ্রহ করে আপনার প্রশ্নটি কমেন্ট বক্সে লিখুন।আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব বিষয়টি স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে।


ডিসক্লেমার MoneyWiseMind  প্রদত্ত তথ্য কেবল শিক্ষামূলক  তথ্যগত উদ্দেশ্যে ব্যবহারযোগ্য এটি কোনো আর্থিক পরামর্শ নয়তাই  তথ্যের উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয় কোনো আর্থিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই একজন অনুমোদিত আর্থিক পরামর্শদাতার সঙ্গে পরামর্শ করুন।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)